Thursday, May 21, 2020

ইলেকট্রনিক্স বিদ্যা এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রান্সমিটার

ট্রান্সমিটার

ইলেকট্রনিক্স বিদ্যা এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রান্সমিটার

ইলেকট্রনিক্স বিদ্যা এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রান্সমিটার হল এমন একটি যন্ত্র যা তড়িৎ প্রবাহকে ব্যবহার করে বেতার তরঙ্গ উৎপন্ন করে। যখন একটি এন্টেনা এটার সাথে সংযুক্ত থাকে তখন এন্টিনাও বেতার তরঙ্গ নির্গত করে।
কেবলমাত্র সম্প্রচার ছাড়াও ট্রান্সমিটার আরো অনেক নিত্যপ্রযোজনীয় ব্যবহার্য প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়। যার মধ্যে আছে মোবাইল টেলিফোন, ওয়্যারলেস কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ব্লুটুথ প্রযুক্তি সম্পন্ন যন্ত্র, গ্যারেজের দরজা খোলার রিমোট, বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রেডিও, সমুদ্রগামী জাহাজ, মহাকাশযান, রাডার এবং দূরবর্তী চিন্হ সনাক্তকারী বিকন ইত্যাদি। "ট্রান্সমিটার" শব্দটি কেবল ব্যবহৃত হয় এমন যন্ত্রপাতিতে যেখানে বেতার তরঙ্গ উৎপন্ন করা হয় যোগাযোগের উদ্দেশ্যে বা যেখানে রেডিওলোকেশন প্রযুক্তির (যেমন রাডার বা নেভিগেশন রেডিও) ব্যবহার আছে। অন্যকোন উদ্দেশ্যে কৃত্তিমভাবে রেডিও তরঙ্গ উৎপন্ন করা হলে, যদি সেখানে যোগাযোগের প্রয়োজন না থাকে (যেমন: মাই্ক্রোওয়েভ ব্যবহার করে তাপ উৎপন্ন করা) তাহলে তাকে ট্রান্সমিটার বলা যায় না।
সম্প্রচারকার্যে ব্যবহৃত ট্রান্সমিটারকে বিশেষভাবে ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিটারই বলা হয়ে থাকে যেমন বাণিজ্যিক এফএম রেডিও চ্যানেল কিংবা টিভিতে যেগুলো ব্যবহার করা হয়। ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিটার বলতে ট্রান্সমিটার, এ্যান্টেনা, টাওয়ারসহ পুরো সেটআপ টাকেই একসাথে সম্প্রচার ট্রান্সমিটার বলে।
ট্রান্সমিটারকে তুলনামূলক অপ্রাসঙ্গিক একটা টার্মেও ব্যবহার করা হয়। টেলিমেট্রি সার্ভিসে ট্রান্সমিটার হল এমন একটি যন্ত্র বা প্রযুক্তি যেটাকে ব্যবহার করে দৃশ্যমান কোন বস্তুকে সেন্সরের সাহায্যে সিগনালে পরিবর্তন করা যায় এবং দূরবর্তী কোন যায়গায় বিশেষ রিসেপশন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সিগনাল রিসিভ করে পর্দায় তা দেখা যায়।

বর্ণনা

একটি ট্রান্সমিটার যেকোন ইলেকট্রনিক যন্ত্র বা বর্তনী (সার্কিট) থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আলাদা একটি যন্ত্র হিসেবে থাকতে পারে। ট্রান্সমিটার এবং রিসিভারকে একত্র করে ট্রান্সিভার নামে ডাকা হয়। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে প্রায়শই ট্রান্সমিটারকে এক্সএমটিআর বা টিএক্স লেখা হয়। রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রান্সমিটারের কাজই হল দূরবর্তী যায়গায় সিগনাল বা সংকেতকে পৌছে দেওয়া। ট্রান্সমিটারকে যেকোন প্রকার তথ্যকেই ইলেকট্রনিক সিগনালে রুপান্তর করে দেওয়া হয় যেমন: অডিও বা ভয়েস/সাউন্ডের ক্ষেত্রে মাইক্রোফোন ব্যবহার করে, ভিডিওর ক্ষেত্রে ক্যামেরার লেন্সকে ব্যবহার করে আবার ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ডিভাইসে কম্পিউটারের ডিজিটাল সিগনালের মাধ্যমে। বিভিন্ন ক্ষেত্র বা মাধ্যমে থেকে পাওয়া এসব সিগনালকে তারপর ট্রান্সমিটার একীভূত করে এবং রেডিও তরঙ্গতে পরিবর্তন করে বেতার তরঙ্গ বিকিরণ করে, যাকে ক্যারিয়ার সিগনাল বলা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটাকেই বলা হয় "মডুলেশন"। বিভিন্ন রকম ট্রান্সমিটারে বিভিন্নভাবে তথ্য প্রক্রিয়া করা হয়। এ্যামপ্লিচ্যুড মডুলেশানে (এম), রেডিও সিগনাল বাড়িয়ে কমিয়ে এ্যাম্প্লিচ্যুড করে তথ্য প্রক্রিয়া করে প্রেরণ করা হয়। ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশানে (এফএম), বেতার বর্ণালীর রেডিও তরঙ্গকে বাড়িয়ে কমিয়ে তথ্য প্রেরণ করা হয়। এর বাইরেও বহু পদের মডুলেশন আছে।
বহনযোগ্য যন্ত্রপাতি যেমন মোবাইল ফোনে, ওয়াকি-টকিতে বা গ্যারেজের দরজা খোলার রিমোটের ভিতর ব্যবহৃত ট্রান্সমিটারে এন্টিনা অবশ্যই থাকে। কখনও কখনও ভিতরে আবার কখনোও বাইরেও দৃশ্যমান হয়। ট্রান্সমিটার যত শক্তিশালী হবে, এন্টিনা তখন উচু ভবনের ছাদে বা সম্পূর্ণ আলাদা একটি টাওয়ার বানিয়ে ফীড লাইন অর্থাৎ ট্রান্সমিশন কেবলের মাধ্যমে ট্রান্সমিটারের সাথে যুক্ত হবে।

ইতিহাস

১৮৮৭ সালে জার্মান পদার্থবিদ হেনরিক হার্টজ বেতার তরঙ্গ নিয়ে গবেষনার সময় প্রাথমিক ট্রান্সমিটার তৈরী করেন যাকে "হার্জের অস্কিলেটর" বলা হত। দুটো পরিবাহী কন্ডাকটরের মধ্যে বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ আদান-প্রদানের মাধ্যমে এটা কাজ করত। ১৮৯৫ সালে, স্পার্ক ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে মার্কোনি সর্বপ্রথম বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী করেন। এটি কিন্তু বর্তমান সময়ের মত অডিও সম্প্রচার করতে পারত না। তার বদলে টেলিগ্রাফিক সঙ্কেত আদান-প্রদান করতে পারত। অপারেটর যিনি মর্স কোড জানতেন তিনি শব্দ শুনে অর্থ বের করতেন। রেডিও প্রযুক্তির প্রথম তিন দশকে (১৮৮৭ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত) এই স্পার্ক গ্যাপ ট্রান্সমিটারই ব্যবহার করা হত। এই সময়টুকুকে বলা হয় ওয়ারলেস টেলিগ্রাফি বা স্পার্ক এরা বা "স্ফুলিঙ্গ যুগ"।
যেহেতু এগুলা দূর্বল তরঙ্গদৈর্ঘ উৎপন্ন এবং নির্গত করত তাই এগুলোতে শব্দ এবং অবান্চিত নয়েজও থাকত অনেক বেশি। নয়েজের ব্যপারটা বুঝিয়ে বলছি, একটি বিস্তৃত বেতার বর্নালীতে সিগনালটি ছড়িয়ে পড়ত এবং অন্য ট্রান্সমিটারকেও তাদের সংকেত আদান-প্রদানে বাধা দিত। ১৯২০ সালের দিকে দুটি ট্রান্সমিটার পদ্ধতি বাজারে চলে এল। একটির নাম আলেক্সেন্ডারসন অল্টারনেটর এবং আরেকটির নাম পওলসন আর্কট্রান্সমিটার, দুটোই ছিল প্রথম যুগের কন্টিনিউয়াস ওয়েভ (সিডব্লিউ) ট্রান্সমিটার।
১৯২০ সালে ভ্যাকুয়াম টিউব ট্রান্সমিটার বাজারে আসে যেগুলো পূর্বে উল্লেখকরা নয়েজের ত্রুটিমুক্ত ছিল। এগুলো ১৯১২ সালে আবিস্কৃত এডওয়ার্ড আর্মস্ট্রং এবং আলেক্সান্ডার মেসনার এর যৌথ গবেষণার ফসল "ফিডব্যাক অস্কিলেটর" ব্যবহার করে তৈরী করা হয়েছিল। ফিডব্যাক অস্কিলেটরও ১৯০৬ সালে লি দি ফ্রস্ট এর গবেষণায় উদ্ভাবিত ভ্যাকুয়াম টিউবকে কেন্দ্র করে বানানো হয়েছিল। ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহারের প্রথম কারণ ছিল এগুলা অপেক্ষাকৃত কম ব্যয়বহুল। আর ভ্যাকুয়াম টিউব এ্যাম্প্লিফায়েড মডুলেশন ব্যবহার করে / উৎপন্ন করতে পারত যা দ্বারা অডিও বার্তা পাঠানো যেত।
১৯২০ সালে এর ফলেই প্রথম বাণিজ্যিক এএম রেডিও সম্প্রচার শুরু হয়েছিল। সত্যিকারের এফএম রেডিও আবিস্কার হয় ১৯৩৩ সালে এডউইন আর্মস্ট্রং কর্তৃক। এটি এএম রেডিওর চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সুস্থির এবং কম নয়েজ থাকার কারণে ১৯৩৭ সাল থেকে প্রথম কমার্শিয়াল এফএম রেডিও স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ১৯২০ সালের শেষদিক থেকে পরীক্ষামূলক টিভি সম্প্রচারেরও চেষ্টা করা হয়, যদিও সত্যিকারের সফল টেলিভিশন সম্প্রচারণ শুরু করতে করতে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত লেগে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাডারের ব্যবহার ছিল ইউএইচএফ এবং মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গে হাই ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিটারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান এবং আরও বেশ কিছু নতুন নতুন যন্ত্রপাতি যার মধ্যে ছিল: ম্যাগনেট্রন, ক্লিসট্রন এবং ওয়েভ টিউব। ট্রানজিস্টরের আবিস্কারের পরে ১৯৬০ এর দিকে ছোট বহনযোগ্য ট্রান্সমিটারের আবির্ভাব হয় যেমন তারবিহীন মাইক্রোফোন, ওয়াকি-টকি ইত্যাদি। যদিও ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিলিটারীদের ব্যবহৃত ওয়াকি টকি ছিল মূলত ভ্যাকুয়াম টিউব নির্ভর। বর্তমান যুগে, রেডিও বর্ণালীতে সংরক্ষিত বিভিন্ন রেন্জের ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করার জন্যে উপযোগী করে ভিন্ন ধরনের ট্রান্সমিটার তৈরী করা হয়েছে যা স্প্রেড স্পেকট্রাম অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন রেন্জে একসাথে কাজ করতে পারে। আরও জানতে পড়ুন আমার অনুবাদকৃত আরেকটি নিবন্ধ বেতার বর্ণালী।

কিভাবে কাজ করে

ট্রান্সমিটার সাধারণত বিদ্যুত সাপ্লাই থেকে বা ব্যটারী থেকে এসি কারেন্ট টেনে নিয়ে বিদ্যুট শক্তিকে বেতার তরঙ্গে রুপান্তর করে, যা প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ-কোটিবার দিক পরিবর্তন করে। এই চলবিদ্যুৎ শক্তিই একটি কন্ডাকটর বা এ্যান্টেনার সাহায্যে তড়িৎ-চুম্বকীয় ঢেউ বা রেডিও ওয়েভ বিকিরণ করে। ট্রান্সমিটার তথ্য বা ডাটা (যেমন অডিও বা ভিডিওকেও) রেডিও তরঙ্গে রুপান্তর করে। ট্রান্সমিটার যখন এন্টিনায় বার্তা পাঠায় তখন সেই বার্তা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গে রুপান্তরিত হয়ে রিসিভারের এ্যান্টেনায় পৌছায়। তখন রিসিভার এন্টেনায় একই রকম বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে শব্দ বা ডাটা উৎপন্ন করে। সত্যিকারের একটি ট্রান্সমিটারে নিম্নোক্ত যন্ত্রপাতি থাকে:
এমন একটি পাওয়ার সাপ্লাই সার্কিট যেখানে পাওয়ার ইনপুট থেকে প্রয়োজনীয় ভোল্ট উৎপন্ন করতে সক্ষম।
রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগনাল উৎপন্ন করতে পারবে এমন একটি ইলেকট্রনিক অসিলেটর সার্কিট। এটাই মূলত বার্তাকে একটি কন্টিনিয়াস ওয়েভ ফর্মে সাইন ওয়েভের মতন করে বাতাসে ভাসমান অবস্থায় রাখে যাকে ক্যারিয়ার ওয়েভ বলা হয়। আধুনিক যুগের ট্রান্সমিটারে একটি ক্রিস্টাল অসিলেটর ব্যবহার করা হয় যাকে কোয়ার্জ স্ফটিক বা কোয়ার্জ ক্রিস্টালের কম্পনকে ব্যবহার করে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
 একটি মডুলার সার্কিট সেখানে অসিলেটর থেকে উৎপন্ন তথ্যকে ক্যারিয়ার ওয়েভে ছেড়ে দেওয়া হয়। এটা করা হয় ক্যারিভার ওয়েভের কয়েকটা বৈশিষ্ট্যকে একটু এদিক-সেদিক করে ব্যবহার করে। ট্রান্সমিটার থেকে প্রাপ্ত ডাটাটি হয় একপ্রকার অডিও কিংবা ভিডিও সিগনাল অথবা বাইনারী ফর্মে ডিজিটাল সিগনাল।
এএম ট্রান্সমিটারে ক্যারিভার ওয়েভের শক্তি মডুলার সিগনালের ক্ষমতার উপরে পরিবর্তিত হয়। এফএম ট্রান্সমিটারে মডুলার সিগনালের দ্বারা ক্যারিয়ারের ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারিত হয়।
ফ্রিকোয়েন্সি শিফট ট্রান্সমিটারে (অর্থাৎ যেকানে ডিজিটাল ডাটা ট্রান্সমিট করা হয়), ক্যারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি দুটো ভিন্ন তরঙ্গে সিগনাল শিফট করে তথ্য প্রবাহ করে থাকে যার একটা ১ এবং আরেকটা শুন্যকে নির্দেশ করে।  
আরো অনেক রকম মডুলেশন ব্যবহার করা হয়। বড় ধরনের ট্রান্সমিটারে প্রায়শই অসিলেটর আর মডুলারকে একত্রে "এক্সাইটার" বলা হয়।
একটি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এমপ্লিফায়ার যা শক্তি বিবর্ধকের কাজ করে, রেডিও তরঙ্গের সম্প্রচারসীমা বাড়িয়ে দেয়।
 একটি ইমপেডেন্স মেশিন বা এ্যান্টেনা টিউনার সার্কিট ব্যবহার করা হয় ট্রান্সমিটারের ইমপেডেন্স এর সাথে এন্টিনার ইম্পেডেন্স এর মধ্যে মিল করানোর জন্যে যাতে এ্যান্টেনার ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার হয়। ট্রান্সমিটার আর এ্যান্টেনার ইম্পেডেন্স একরকম না হলে একপ্রকার অবস্থার তৈরী হয় যাকে বলে স্ট্যান্ডিং ওয়েভ। এরফলে এ্যান্টেনা থেকে নির্গত শক্তি আবার ট্রান্সমিটারের দিকেই ফেরত আসে যার ফলে শক্তিক্ষয় হয় আর ট্রান্সমিটারও অযথাই গরম হয়ে থাকে।
উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সির এ্যান্টেনায়, ইউএইচএফ এবং মাইক্রোওয়েভ রেন্জে, স্বাভাবিক ফ্রিকোয়েন্সি রেন্জের অসিলেটর কাজ করে না। এ ধরনের ট্রান্সমিটারে অসিলেটর লো-ফ্রিকোয়েন্সি উৎপন্ন করে। সুতরাং বার্তা যায়গামত পৌছাতে এতে ফ্রিকোয়েন্সি মাল্টিপ্লায়ার (বর্ধক) ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

আইনগত বাধ্যবাধকতা

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই ট্রান্সমিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে নচেৎ জরুরীমুহুর্তে যে কোন যোগাযোগের ক্ষেত্রে অন্য ফ্রিকোয়েন্সির হস্তক্ষেপ (ইন্টারফেয়ারেন্স) হতে পারে। ট্রান্সমিটার অবশ্যই উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সরকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধিত হওয়া উচিৎ, যেমন: ব্রডকাস্ট, মেরিন যোগাযোগ, এয়ারব্যান্ড বা বিমান যোগাযোগ, এ্যামেচার রেডিও বা হ্যাম রেডিও ইত্যাদি।
আইটিইউ নামের সংস্থাটি বেতার বর্ণালী থেকে বিভিন্ন কাজের উপযুক্ত ব্যান্ড নির্ধারিত করে দেয়। বার্তা প্রেরণকারী ট্রান্সমিটারকে সনাক্ত করতে কোন কোন ক্লাসের রেডিও ট্রান্সমিটারকে একটি ইউনিক কল সাইন দেওয়া হয় (উদাহরণস্বরূপ: এস২১জেড হল একটি বাংলাদেশী কল সাইন)। এজন্য ট্রান্সমিটার পরিচালনাকারীকে অবশ্যই সরকার থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। যেমন: বাংলাদেশে হ্যাম রেডিও অপারেটরের একটি লাইসেন্স নিতে হলে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন থেকে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় যার দ্বারা রেডিও পরিচালনাকারী ব্যক্তির যোগ্যতা সমন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।
তবে হ্যাঁ, কিছু কিছু ট্রান্সমিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের বিষয়টি শিথিল করা হয়েছে যেমন মোবাইল ফোন, কর্ডলেস টেলিফোন সেট, ওয়াকি-টকি, ওয়্যারলেস মাইক্রোফোন, ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ প্রযুক্তি, গ্যারেজ ডোর ওপেনার এবং বেবি মনিটর ইত্যাদি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন রেগুলেশনের ১৫ নম্বর অংশ অনুযায়ী এইসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের ব্যাপার থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে, যদিও বিক্রয়পূর্ব কিছু নির্দেশিকা আছে।  

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া

ভালবাসার রূপালী সুর